মোবাইল আর্থিক সেবাখাতে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়

প্রকাশকাল: ১৭ জুন ২০২৫

অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক খাত বিকাশে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাম্প্রতিক কালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রথাগত ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতার বাইরে থাকা গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী ও নিম্ম আয়ের মানুষের কাছে সহজে আর্থিক সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১১ সালে বাংলাদেশে এমএফএস কার্যক্রম চালু হয়। দ্রুত ও সহজে আর্থিক লেনদেন করার সুবিধার পাশাপাশি সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা ও প্রণোদনা সরাসরি দুর্নীতিমুক্তভাবে উপকারভোগীদের কাছে পৌঁছাতে এবং কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক লেনদেনে সহায়ক ভূমিকা পালনে এমএফএস বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যা একই সঙ্গে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ক্রমবর্ধমান গ্রাহক সংখ্যা ও লেনদেনের পরিমাণ বিবেচনায় সম্ভাবনাময় এমএফএস খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলেও এ খাতে বহুমুখী সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।

গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, এমএফএস খাতে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ সুশাসনের সবগুলো নির্দেশকে উদ্বেগজনক ঘাটতি রয়েছে। এমএফএস খাতের উন্নয়ন ও বিকাশে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। “অ্যাডহক” ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রবণতা, নীতি দুর্বলতা, বিদ্যমান আইনের ঘাটতি এবং রাজনৈতিক ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর প্রভাব এ খাতের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এমএফএস খাতের উদ্যোক্তা, নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি কর্তৃপক্ষ এবং রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের একটি অংশ ত্রিপক্ষীয় আঁতাতের মাধ্যমে নীতি করায়ত্ত করেছে, এমনকি তদারকি ব্যবস্থাকে প্রভাবিত এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে এই খাতকে কুক্ষিগত করেছে। ফলে এই খাতে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র অসম ও সংকুচিত হয়েছে এবং এ খাতের সুষ্ঠ বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করেছে। একই সঙ্গে উচ্চ হারে সেবামূল্য ধার্য করার মাধ্যমে জনগণের ওপর আর্থিক বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে গ্রাহক ও রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের সুযোগ তৈরি হয়েছে। গবেষণায় দেখা যায়, এমএফএস সেবা পেতে গ্রাহকদের বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের তুলনায় প্রায় ৭ থেকে ১৫ গুণ বেশি সেবামূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে। ২০২৪ সালে এমএফএসের মাধ্যমে ৫.৫ লাখ কোটি টাকা “ক্যাশআউটের” ক্ষেত্রে গ্রাহকদের নিকট থেকে প্রাক্কলিতভাবে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা পর্যন্ত সেবামূল্য আদায় করা হয়েছে, যেখানে সমপরিমাণ নগদ উত্তোলনে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো প্রাক্কলিতভাবে মাত্র ৬৩৯ কোটি টাকা সেবামূল্য আদায় করেছে। এমনকি প্রতিবেশি কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশে এমএফএস সেবামূল্য সর্বোচ্চ।

পুরো পলিসি ব্রিফের জন্য এখানে ক্লিক করুন