নতুন বাংলাদেশ : দুর্নীতি প্রতিরোধ, গণতন্ত্র ও সুশাসন

প্রকাশকাল: ২৮ আগস্ট ২০২৪

প্রেক্ষাপট

সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহে নজিরবিহীন রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন ঘটে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ৮ আগস্ট ২০২৪ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকারের কাছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার মূল প্রত্যাশা একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন ‘‘নতুন বাংলাদেশ’’ গড়ার উপযোগী রাষ্ট্রকাঠামো ও পরিবেশ তৈরি করা।

কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা চিরস্থায়ীকরণের অপপ্রয়াসের অন্যতম কারণ-জবাবদিহির ঊর্ধ্বেক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বহুমাত্রিক দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ ও অর্থপাচারসহ বহুমুখী দুর্বৃত্তায়নের বিচারহীনতা নিশ্চিত করা। ‘নতুন বাংলাদেশে’ রাষ্ট্র-সংস্কার ও জাতীয় রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মূল অভীষ্ট হতে হবে দুর্নীতি, তথা ক্ষমতার অপব্যবহারের এই বিচারহীনতার মূলোৎপাটন করা। এই অভীষ্ট অর্জনের লক্ষ্যে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল প্রতিষ্ঠানের আমূল সংস্কারের পাশাপাশি দুর্নীতিবিরোধী চাহিদা জোরদার করতে গণমাধ্যমসহ সকল অংশীজন ও সাধারণ জনগণ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের সক্রিয় অংশগ্রহণের উপযোগী নিস্কন্টক পরিবেশ অপরিহার্য। তবে সার্বিক রাষ্ট্র পরিচালনা কাঠামোকে দলীয়করণ ও পেশাগত দেউলিয়াপনা থেকে উদ্ধার করা ছাড়া দুর্নীতির কার্যকর নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব। জনপ্রতিনিধিত্ব, সরকার ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও চর্চায় এমন আমূল পরিবর্তন আনতে হবে যেন জনগণের রায় ও অর্পিত ক্ষমতায় এবং জনগণের কাছে কার্যকর জবাবদিহিতায় রাষ্ট্র পরিচালিত হয়।

দেশে দুর্নীতি প্রতিরোধ, গণতন্ত্র, সুশাসন ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্র-কাঠামোতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের লক্ষ্যে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নিচের সুপারিশমালা প্রস্তাব করছে। প্রস্তাবিত সুপারিশমালায় সার্বিকভাবে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের সংস্কার-সম্পর্কিত নয়টি কৌশলগত বিষয় সন্নিবেশিত হয়েছে-

আশু প্রাধান্য

  • শান্তি-শৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা ও প্রশাসনিক স্বাভাবিকতা নিশ্চিত করা;
  • নজিরবিহীন প্রাণহানিসহ বহুমাত্রিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য সরাসরি ও হুকুমের অপরাধে দায়ী সকলকে জাতিসংঘের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে বিচারপ্রক্রিয়া যেন কোনোভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, তা নিশ্চিতে যথাযথ আইনসম্মত-প্রক্রিয়া অনুসরণ করা নিশ্চিত করা;
  • অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা;
  • উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি ও অর্থপাচারের কার্যকর জবাবদিহির অনুকরণীয় উদাহরণ স্থাপনে দুদক, বিএফআইইউ, এনবিআর, সিআইডি ও অ্যাটর্নিজেনারেলের কার্যালয়ের সমন্বয়ে টাস্কফোর্সগঠন করা;
  • ‘নতুন বাংলাদেশ’ এর অভীষ্ট ও লক্ষ্য অর্জনে রাষ্ট্র-সংস্কারের অপরিহার্য কাঠামো বিনির্মাণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কৌশলপত্র প্রকাশ করা।

 

বিস্তারিত জানতে নিচে ক্লিক করুন