পাঠ্যপুস্তক ব‍্যবস্থাপনার এক্তিয়ার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে হস্তান্তর কোনো সমাধান নয়, বরং এনসিটিবির কার্যকর স্বায়ত্তশাসন এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাসহ সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে: টিআইবি

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

ঢাকা, ১২ অক্টোবর ২০২৫: জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর স্বায়ত্তশাসন এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাসহ দীর্ঘকালের পুঞ্জীভূত সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায় অনুসন্ধানের পরিবর্তে মাথাব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলার মতো প্রাক-প্রথমিক ও প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, প্রকাশনা ও বিতরণের দায়িত্ব প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওপর ন্যস্ত করার মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ। একইসঙ্গে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন থেকে শুরু করে বিতরণসহ সার্বিক কার্যক্রমে বিদ্যমান দুর্বলতাসমূহ চিহ্নিত করে স্বায়ত্বশাসন এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাসহ প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতের উদ্যোগ গ্রহণের জন‍্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় সংস্থাটি।

এনসিটিবির বাস্তব স্বায়ত্বশাসন ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে, এক্ষেত্রে বিকেন্দ্রীকরণের নামে কোনো এড-হক উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে না উল্লেখ করে আজ এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বিদ্যমান আইন সংশোধন করে প্রাথমিকে স্তরের পাঠ্যবই প্রাথমিক শিক্ষা অধিপ্তরের মাধ্যমে মুদ্রণ ও বিতরণের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগ এনসিটিবিকে কেবল দুর্বলই করবে, লক্ষ‍্য অর্জনে গুণগত কোনো পরিবর্তন আনবে না। সুশাসনের ঘাটতি ও ব‍্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিকার ও প্রতিরোধের কার্যকর উপায় অনুসন্ধান করতে হবে। দুর্নীতিতে প্রত্যক্ষ ও যোগসাজশে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। অন‍্যদিকে মূল সমস্যার সমাধান না করে পাঠ্যপুস্তক-সংক্রান্ত কাজে এনসিটিবির দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাকে আমলাতান্ত্রিক প্রভাবে বিলুপ্ত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে প্রায় শূন্য থেকে শুরু করে এ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পণের কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তি নেই। বিদ‍্যমান প্রেক্ষাপটে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে আলাদাভাবে পাঠ্যবই ছাপার এক্তিয়ার অর্পণ করলে সংকট ও সমন্বয়হীনতা আরো বৃদ্ধি পাবে। অধিকন্তু তথাকথিত বিকেন্দ্রীকরণের ফলে বাস্তবায়নকারী সংস্থা দুইটি হলেও কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা না গেলে এই সিদ্ধান্ত ফলপ্রসূ হবে না। বরং এক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতি অন‍্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর হবে মাত্র।’

সময়মতো বই সরবরাহে ব্যর্থতা, মান নিয়ে প্রশ্ন ও কাজের সমন্বয়হীনতার দায়ভার এককভাবে এনসিটিবির ওপর আরোপ করা আপাত দৃষ্টিতে স্বাভাবিক মনে হলেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর কী দায় এড়াতে পারে? এই প্রশ্ন রেখে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তর্দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বায়ত্বশাসনের পথে প্রত‍্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রতিবন্ধকতার কারণে অদক্ষতা, অনিয়ম ও পেশাগত অবক্ষয়ের শিকার এনসিটিবি কার্যকরভাবে অর্পিত ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এক্ষেত্রে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নসংশ্লিষ্ট সকল বিষয়সহ, দরপত্রপ্রক্রিয়া, মুদ্রণ, প্রকাশ ও বিতরণে এনসিটিবি যাতে সম্পূর্ণ স্বাধীন সিদ্ধান্তগ্রহণের এক্তিয়ার পায়, সে ব্যাপারে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে উত্থাপিত ব্যর্থতা ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণ অনুসন্ধান সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই।’

গণমাধ্যম যোগাযোগ:
মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম
পরিচালক, আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন
মোবাইল: ০১৭১৩-১০৭৮৬৮
ই-মেইল: tauhidul@ti-bangladesh.org

Read in English

Transferring the Mandate of Textbook Management to the Directorate of Primary Education is Not a Solution — NCTB’s Effective Autonomy, Transparency, Accountability, and Good Governance Must Be Ensured: TIB


Press Release