ইভিএম ক্রয় প্রশ্নবিদ্ধ, অগ্রিম নির্বাচনী প্রচারণা ও ভোটকেন্দ্রীক প্রকল্প অনৈতিক
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
ইভিএম ক্রয় প্রশ্নবিদ্ধ, অগ্রিম নির্বাচনী প্রচারণা ও ভোটকেন্দ্রীক প্রকল্প অনৈতিক
ঢাকা, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮: ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর যথার্থতা বিশ্লেষণ, নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও ভোটারদের প্রস্তুতি যাচাই না করেই বিপুল অর্থ ব্যয়ে নিবার্চন কমিশন কর্তৃক ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ক্রয়ের উদ্যোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তরিঘরি করে এ ধরনের বড় আকারের ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত সম্ভব হবে কি-না সে বিষয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। একই সাথে একদিকে তফসিল ঘোষণার আগে মনোনয়ন প্রার্থীদের প্রকাশ্য নির্বাচনী প্রচারণা ও অন্যদিকে উন্নয়নের নামে নির্বাচনে জনসমর্থন ও ভোট বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন অনৈতিক ও নির্বাচনে সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিতকরণের ধারণার পরিপন্থী বিবেচনায় উদ্বেগ জানিয়েছে টিআইবি।
আজ এক সংবাদ বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইভিএম ব্যবহারের যথার্থতা ও সম্ভাব্য ফলাফল যাচাই বা ফিজিবিলিটি স্টাডি না করে নির্বাচনে ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রায় দেড় লাখ ইভিএম ক্রয়ের প্রকল্প গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অত্যন্ত দ্রুত প্রক্রিয়ায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরুর চেষ্টা করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের ইভিএম ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও ভোটারদের প্রস্তুতির নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ না করেই বিপুল অর্থ ব্যয়ে ইভিএম ক্রয়ের এ ধরনের সিদ্ধান্ত অবিবেচনাপ্রসূত, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য। তাছাড়া তরিঘরি করে এ ধরনের বড় আকারের ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হলে তাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে কি-না, সে বিষয়েও যথেষ্ট সংশয় সৃষ্টি হয়।”
ড. জামান আরো বলেন, “একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বেই ইতিমধ্যে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক নির্বাচনী প্রচারণা লক্ষ করা যাচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক নির্বাচনী সংস্কৃতির সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বেই মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা-কর্মীদের এ ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা পরিচালনা থেকে বিরত থাকা রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নৈতিক দায়িত্ব ও গণতান্ত্রিক আচরণের পরিচায়ক। নির্বাচন কমিশনের এ বিষয়ে সম্পূর্ণ নীরব ভূমিকা হতাশাব্যঞ্জক।”
সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জনসমর্থন ও ভোট বৃদ্ধির লক্ষ্যে নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের নামে প্রকল্প গ্রহণ বিষয়ে ড. জামান বলেন, “আমরা দেখতে পাই, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রতিটি সরকারি দল জনসমর্থন ও ভোট বৃদ্ধির লক্ষ্যে নির্বাচনী এলাকাকেন্দ্রীক ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল কর্তৃক নির্বাচনে ভোট বৃদ্ধির এ ধরনের কৌশল গ্রহণ সম্পূর্ণ অনৈতিক ও সুস্থ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিপন্থী। এর ফলে সরকারি দলের নির্বাচনী ব্যয়ের বোঝা যেমন চূড়ান্ত বিবেচনায় জনগণের বইতে হয়, তেমনি নির্বাচনে সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিতের যে অপরিহার্য পূর্বশর্ত, তাও লঙ্ঘিত হয়।” তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচনী প্রচারণা ও র্নিাচনের কমপক্ষে ছয় মাস আগে থেকে উন্নয়নের নামে জনগণের অর্থে ভোটার আকর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন বন্ধে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনেরও দাবি জানায় টিআইবি।