শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবন্দর এবং এটি দেশের বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর ও শিল্পসমৃদ্ধ অঞ্চলে অবস্থান হওয়ায় বিমানবন্দর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ২০০০ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে ৪.৯৪ গুণ এবং ফ্লাইট সংখ্যা বেড়েছে ৩.১৫ গুণ। চট্টগ্রাম একটি প্রবাসী নিবিড় জেলা। ২০০৫-২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রবাসী কর্মসংস্থানের দিক থেকে চট্টগ্রাম জেলার অবস্থান বাংলাদেশে দ্বিতীয়, এ সময় চট্টগ্রাম জেলার মোট ৬ লক্ষ ৪৫ হাজার ৫৪৬ জন কর্মী প্রবাসে কর্মসংস্থান লাভ করেছে। চট্টগ্রাম এবং এর পাশাপাশি কয়েকটি জেলার প্রবাসী যাত্রীরা যাতায়াতের জন্য এ বিমানবন্দরের উপর নির্ভরশীল। বিমানবন্দরের আশেপাশে তিনটি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল এবং বিভিন্ন রপ্তানিমুখী শিল্পের অবস্থানের কারণে এ বিমানবন্দরের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেশি। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর মধ্যপ্রাচ্য-দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ৯টি আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রীদের সেবা প্রদান করছে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রুটেও যাত্রীসেবা দিচ্ছে। স্বল্প পরিসরে কার্গো পরিবহন সেবাও দিচ্ছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামের যাত্রীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে এ বিমানবন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিমানবন্দরের ওপর মানুষের নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বিমানবন্দরের বার্ষিক যাত্রীসেবা প্রদানের সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে। ২০০০ সালে ২,৫২,৯৬৫ জন যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেছে ২০১৫ সালে বিমানবন্দর ব্যবহার করেছে ১১,৭০,৩০৩ জন যাত্রী, অর্থাৎ যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪.৬২ গুন। ২০১৬ সালে এ বিমানবন্দর ব্যবহার করেছে ১২,৫০,৩১৫ জন যাত্রী, যা ছিল ২০১৫ সালের তুলনায় ৬.৮০ শতাংশ বেশি। একটি ক্ষুদ্র অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রুপান্তরিত হওয়ার পথে যে পরিবর্তনসমূহ ঘটেছে তা বর্তমান চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। সেবার পরিধি এবং ব্যপকতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা,কার্যক্রমে ধীর গতি, পুশ কার্ট, বোর্ডিং ব্রিজ, ফর্ক লিফট সংকট, প্রবাসীদের ভারী লাগেজ বহনে সমস্যা, লাগেজ লাপাত্তা, শুল্ক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অসাধু কর্মীদের দ্বারা হয়রানি এসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধির জন্য কিছু ইতিবাচক উদ্যোগও গৃহীত হয়েছে যেমন, অত্যাধুনিক রাডার স্থাপন, উন্নত নিরাপত্তা সামগ্রীর ব্যবহার, সচেতনতনতার জন্য স্থানীয় ক্যাবল টিভিতে বিজ্ঞাপন প্রচার, অবকাঠামোগত উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ। এতদস্বত্তেও বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মী কর্তৃক যাত্রীদের হয়রানি এখনো অব্যাহত আছে।