বাংলাদেশের বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) অনুপ্রবেশ একটি ঐতিহাসিক এবং চলমান সংকট। এ সংকট শুধুমাত্র বাংলাদেশ মায়ানমার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে না বর্তমানে এ সংকট জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বহিঃর্বিশ্বের অনেক দেশের সরকার ও মানুষের উদ্বেগের বিষয় হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। জাতিসংঘ ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের বিশ্বের সবচেয়ে ‘‘নিগৃহীত জনগোষ্ঠী’ হিসেবে মায়ানমার কর্তৃপক্ষের পরিচালিত এই সাম্প্রতিক নৃশংসতাকে “জাতিগত নিধন” হিসেবে চিহ্নিত করে। বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচন্ড নিন্দার মধ্যেও এ নিধন চলমান রয়েছে এবং প্রতিদিনই বাংলাদেশে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৭৮ সালের প্রথম দিকে অপরেশান নাগমিন (ড্রাগন কিং) এর মাধ্যমে মায়ানমার সরকার রাখাইন এবং কাচিন রাজ্যে রোহিঙ্গা নাগরিকদের উপর দমন পীড়ন শুরু করে। এ দমনপীড়নের প্রতিক্রিয়ায় প্রায় দুই লক্ষ মায়ানমারের নাগরিক বাস্তুচ্যূত হয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নেয়। সেই সময়ে আন্তর্জাতিক মহলের চাপে বাংলাদেশ ও মায়ানমার আলোচনার মাধ্যমে বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমিতে ফেরত নেয়ার ব্যাপারে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৭৮ সালের আগস্ট মাস থেকে ১৯৭৯ সাল নাগাদ ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে মায়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। বাকি ২০ হাজার এর মধ্যে ১০,০০০ জন বিভিন্ন সময়ে মারা যায় এবং ১০ হাজার এর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।